বিনোদন

পর্ব - ২, ভিমরতি।। ডাঃ সাবরিনা

পর্ব - ২, ভিমরতি।। ডাঃ সাবরিনা

ফারুক সাহেবের সামনে যে লাস‍্যময়ী তরুণী দাঁড়িয়ে আছে সে বরিশালের বাকেরগঞ্জ থেকে ঢাকা শহরে এসে টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে ! শহুরে চাকচিক্যের গল্প শুনে স্বল্প টাকা, অল্প জ্ঞান আর বুকভরা কল্প কাহিনি নিয়ে বছরখানেক আগে সে লঞ্চেউঠেছিল ! সম্বল বলতে অনার্স সেকেন্ড ক্লাসের সার্টিফিকেট, মাটির ব‍্যাংক ভাংগা দুই হাজার টাকা, গলায় একটা চার আনা ওজনের সোনার চেইন, রং চটা ভ‍্যানিটি ব‍্যাগে দূর সম্পর্কের খালাতো বোনের ঠিকানা লেখা চিরকুট আর একটা চব্বিশ বছরের যৌবনবতী শরীর!
       পরীবাগে একটি অখ্যাত ক্লিনিকের রিসেপশনিসট এর পদ থেকে একটি বহুজাতিক ব‍্যাংকে প্রবেশনারি পদে আসতে পদে পদে তাকে বাধাগ্রস্থ হতে হয়েছে ! পুরুষ আর নারীর মধ্যে একটা সম্পর্ক দেখেই সে অভ্যস্ত- খাদ‍্য আর খাদকের সম্পর্ক! সকল পুরুষই খাদক ! কেউ চোখে দেখে আবার কেউ চেখে দেখে ! 
প্রথম দিকে সে আত্মগ্লানিতে ভুগতো ! পরে বুঝেছে,বড় শহরে বড় স্বপ্নকে সফল করতে হলে নিজেকে ছোট করা কোন বড় ব্যাপার নয়! কোমর পর্যন্ত লম্বা চুল আর ব্লাউজের হাতা ছোট করার সাথে সাথে আনোয়ারা নামকেও ছোট করে কেটে আনোয়ারা থেকে হয়েছে এ‍্যানি!
      কষ্ট করেছে, নষ্ট হয়েছে কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি ! তার লক্ষ‍্য বাকেরগঞ্জে বাপের ভিটায় পাকা দালান করবে , ছোট ভাইকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করানোর পরই সৌদি পাঠিয়েড দিবে ! বড় বোনটা বোবা! তাকে বিয়ে দিতে হলে, মোটা অংকের যৌতুক লাগবে!
         ব‍্যাংকে যদি বিশাল এমাউনটের টাকা এফডিআর করানোর মতো তিন চারটা মালদার ব্যক্তি জোগাড় করতে পারে তবেই তার টার্গেট সম্পন্ন! চাকরিটা স্থায়ী হবার পাশাপাশি পদোন্নতিও হতে পারে ! এজন্যই ফারুক সাহেবের কাছে আসা! 
         এ‍্যানি দেখেছে, মধ‍্যবয়সী পুরুষেরা সামান‍্য আঁচল নাড়া দিলেই ব‍্যপক সাড়া দেয় ! কফিশপে বসে চোখে চোখ রেখে এক কাপ কফি খেলেই তারা শুয়োপোকা থেকে ঝলমলে প্রজাপতি হয়ে ওঠে ! অথচ, তাদের ঘরে বউ পোলাপাইন আছে ! 
সেখানে ফারুক সাহেব তো বিপত্নীক! তাকে এফডিআর করার জন্য রাজি করানো তেমন বিশাল ব্যাপার হবেনা বলেই আনোয়ারা ওরফে এ‍্যানির ধারনা! 
         তবে, ফারুক সাহেব লোকটা দেখতে সুদর্শন হলেও হাবভাব কেমন যেন কর্কশ প্রকৃতির! পাঁচ মিনিট হলো সে রুমে ঢুকেছে এখন পর্যন্ত বসতে বলেন নি! বরং, ভ্রূ কুঁচকে এমনভাবে তাকিয়ে আছেন মনে হয় যেকোন মুহূর্তে ধমকে উঠবেন!!!
        “স‍্যার, আমি ব‍্যাংক থেকে এসেছিলাম একটা কাজে,”বলেই মিষ্টি হেসে এগিয়ে যায় ! 
যা থাকে কপালে !
একবার যে নিষিদ্ধ গন্ধম ফল খেয়েছে, সে কখনও  ফলাফলের চিন্তা করেনা!!!!
(চলবে )