আমার চারপাশে অনেক ভদ্র সুশীল শালীন মানুষের বসবাস।একসময় আমিও তাই ছিলাম ! গালাগালি তো দূরের কথা -বকাবকিও করতে পারতাম না !
খ আর চ দিয়ে গালি এখন আর বুকের মধ্যে খচ করে ওঠেনা! কারন জেলখানায় ঘুম ভাঙতোই গালাগালির শব্দে !
প্রতিবার হাজিরা দিয়ে কারা অভ্যনতরে ঢোকানোর সময় দেহ তল্লাশি হতো! সেই প্রক্রিয়া যেমন রূঢ় তেমনি ক্রুর !লজ্জায়, অপমানে , যন্ত্রণায় বুকের মধ্যে রক্তক্ষরণ হতো ! তখন সেই বোবা কান্না কেউ দেখেনি - দেখলেও কারও কোন বিকার হয়নি !
একটি শাড়ি পরে গোসল করে ভেজা শাড়ি, ব্লাউজ, পেটিকোট, অন্তর্বাস রোদে দাঁড়িয়ে গায়েই শুকিয়েছি! একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে সামান্য এক প্যাকেট স্যানিটারি প্যাডের জন্য মহিলা রক্ষীদের কাছে কাকুতি মিনতি করেছি!
আজ আমার মনে নেই, আমার দাদী, আমার চাচা এমপি, আমার বাবা সচিব!
আমি স্যার সলিমুল্লাহে মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেছি!
আমার কমই মনে পড়ে আমি বিশেষজ্ঞ কার্ডিয়াক সার্জন
আমাকে আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া থেকে কনফারেন্সে রিসার্চ পেপার প্রেজেন্ট করতে আমন্ত্রণ দেওয়া হতো !!
আমি শুধু একটা কথাই স্পষ্ট মনে করতে পারি, আমি এক জেল খাটা বন্দিনী!
যারা ধান্দাবাজি, চান্দাবাজি, মা*দকব্যবসা, নে*শা, পরকীয়া, জেনা, সন্ত্রাস করেও ধরা পরেনি তারা “ভালো”র তকমা লাগিয়ে ঘুরছে ! আমরা মিথ্যা মামলায় ধরাশায়ী হয়ে আজ কারও কাছে “ ভালো” না !
ভালো সাজার আর ইচ্ছে নেই! আগের সাবরিনা মরে গেছে!
নজরুলের সাথে আজ গলা মিলিয়ে বলি,
বন্ধু গো, আর বলিতে পারি না, বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে!
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে।